ছবিঃ শিশুদের টাইফয়েডের লক্ষণ ও প্রতিকার.
2022-10-28 06:02:36
শিশুদের টাইফয়েডের লক্ষণ ও প্রতিকার
গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপদাহের পর বর্ষাকাল যেন একটা স্বস্তির বার্তা নিয়ে আসে। তবে সঙ্গে করে আনে নানারকম অসুখ।বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেশি। বর্ষাকালে বিশেষ করে টাইফয়েড এর প্রকোপ আরও বেড়ে যায়।
টাইফয়েড একটি পানিবাহিত রোগ।মানুষই এই রোগের একমাত্র বাহক। টাইফয়েডের ব্যাক্টিরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ইউরিনের সঙ্গে বের হয়। এই জীবাণু যদি কোনভাবে পানীয় জলের মধ্যে প্রবেশ করে, এবং সেই জল যদি কারোর পেটে যায় তাহলে সেই ব্যক্তির টাইফয়েড হতে পারে। মাঝে মাঝে এই রোগের জীবাণু খাবারের মধ্যেও থাকতে পারে। তাই টাইফয়েড ফিভার প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমেই পার্সোনাল হাইজিনের উপর জোর দেওয়া উচিত। শুধু বাচ্চা নয়, বাবা মা থেকে শুরু করে বাড়ির সকলকেই উপযুক্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে।
টাইফয়েডের লক্ষণঃ
সাধারণত টাইফয়েডের প্রধান লক্ষণ হল জ্বর। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যাথা বা কাঁপুনির মতো আনুষঙ্গিক সমস্যাও হতে পারে। এছাড়া টাইফয়েডের উপসর্গগুলি হল পেটব্যথা বা পেট খারাপ হওয়া, বমি এবং কাশি। সাধারণত টাইফয়েড হওয়ার পাঁচ-ছয় দিন পর কাশি শুরু হয়, যেটাকে ব্রঙ্কাইটিস। টাইফয়েডের ব্যাক্টিরিয়া শরীরে প্রবেশ করার পাঁচ থেকে দশ দিন পরে এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়। রোগটি বাড়াবাড়ির পর্যায় চলে গেলে অন্ত্র ছিঁড়ে যেতে পারে বা ফুটো হয়ে যেতে পারে। টাইফয়েডের জীবাণু অনেক সময় মানুষের গল ব্লাডারে বাসা বাঁধে। মনে রাখা দরকার, অনেকের টাইফয়েড সেরে যাওয়ার পরেও গল ব্লাডারে টাইফয়েডের জীবাণু থেকে যেতে পারে। গল ব্লাডার থেকে এই জীবাণু ইউরিনের মাধ্যমে বেরিয়ে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।
টাইফয়েড রোগীর চিকিৎসাঃ
Typhoid জরের লক্ষণগুলি দেখা গেলে আপনার শিশুকে ডাক্তারের কাছে দ্রুত নিয়ে যান। টাইফয়েড ডায়াগনোসিস করার জন্য বিশেষ কয়েকটা টেস্ট আছে। যেমন- ব্লাড কালচার, স্টুল কালচার, ইউরিন কালচার ইত্যাদি। সেই টেস্টগুলি দ্রুত করিয়ে নিতে হবে।
- সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়েই টাইফয়েডের চিকিৎসা করা হয়।
- জ্বর কমানোর জন্য ঔষধ খেতে হয় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- জ্বরটা কমে গেলে সাধারণত ৫-৬ দিনের একটা অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স দেওয়া হয়।
- অথবা ১০-১২ দিন অ্যান্টিবায়োটিক চালিয়ে যেতে হবে।
Typhoid (টাইফয়েডের) জীবাণু যেহেতু মানুষের ইউরিনের সাথে বেরিয়ে যায়, তাই বাড়িতেই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। টাইফয়েড প্রতিরোধ করতে হলে প্রথমেই পরিবারের সকলের উপযুক্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা মেন্টেন করা উচিত। বিশেষ করে খাওয়ার আগে ভাল করে হাত-পা ধুতে হবে। পানি ফুটিয়ে খাবেন। বাইরের যে সমস্ত খাবার থেকে ইনফেকশন হতে পারে সেগুলি বরং এড়িয়ে চলাই ভাল।