ছবিঃ চালের নোনতা – পিঠা .
2023-08-11 06:18:24
চালের নোনতা – পিঠা
শীতকাল মানেই নানারকম পিঠা খাওয়ার দিন । সিলেটের ট্রেডিশনাল বা ঐতিহ্যবাহী একটি পিঠা হলো নুন গড়া পিথা কিংবা নুনিয়া পিঠা । এটি দিনাজপুরেরও খুবই জনপ্রিয় একটা পিঠা এই নোনতা বা নুনিয়া পিঠা। সিলেটে এই পিঠাকে বলে থাকে নুন গড়া পিঠা, আবার ময়মনসিংহের মানুষ বলে থাকে মসল্লা পিঠা। যেখানে যেই অঞ্চলে যে নামেই ডাকুক না কেন , এই নোনতা পিঠাটি কিন্তু মোটামুটি হারিয়ে যেতে চলেছে আপনাদের আমাদের রান্নাঘর থেকে। রাত-দিন ঢেঁকিতে চাল গুড়ো করে এই নোনতা পিঠা বানানোর সংস্কৃতিতেও মোটামটি ভাটা পড়েছে৷ পিঠা বানানোর উদ্দেশ্যে শহরের চালের কলে নিত্য ভাঙানো হচ্ছে চাল ৷ গ্রামেও এখন ঢেঁকির পরিবর্তে কলে চাল ভাঙানো হচ্ছে ৷ সময়ের সাথে সাথে বদলেছে পিঠা তৈরির ও খাওয়ার ধরন
পিঠার কদর বা সংস্কৃতিতে যে ভাটা পরেও পড়েনি সেটি ঢাকা বা অন্যান্য জেলা শহরগুলোর অলিতে গলিতে জেগে ওঠা নানান ধরনের পিঠার দোকান বা ভ্যানের সংখ্যা দেখলেই তা সহজেই বোঝা যায়৷ পিঠার দোকান ও ভ্যানের সবচেয়ে কমন পিঠা তেলে পিঠা বা পোয়া, ভাপা ,গরম, চিতই ও ধোঁয়া ওঠা ভাঁপা অবশ্য শীতকালেই চলে৷ তবে বছর জুড়ে নাগরিক জীবনে নাস্তার চাহিদা মেটাচ্ছে চিতই ৷ ৮-১০ রকমের ভর্তা দেওয়া এই চিতই পিঠার দাম ৫-১০টাকা৷ তাই ভরপেট নাস্তা বা বৈকালিক খাবারের চাহিদা এই পিঠাই মেটাচ্ছে৷ কেউ কেউ আবার এই চিতই পিঠাকে নোনতা পিঠাও বলে। কিছুটা নোনতা, কিছুটা ঝাল এই পিঠা কিন্তু খেতে দারুণ মজা। চলুন আজ জেনে নিই ঐতিহ্যবাহী এই পিঠা তৈরির রেসিপি-
চালের নোনতা - পিঠার প্রয়োজনীয় উপকরনঃ
- চালের গুঁড়ি - ১ কাপ
- আদা (বাটা) - ১ চা চামচ
- ময়দা - ১/২ কাপ
- পেঁয়াজ (কুচি) - ২ টেবিল চামচ
- গোলমরিচ (গুঁড়া) - ১/২ চা চামচ
- কাঁচামরিচ (কুচি) - ২ টি
- মরিচ (গুঁড়া) - ১/২ চা চামচ
- ধনেপাতা (কুচি) - ২ টেবিল চামচ
- বেকিং পাউডার - ১/২ চা চামচ
- ডিম - ১ টি
- তেল (ভাজার জন্য) - ১/২ কাপ ।
- পানি - ১.৫ কাপ
চালের নোনতা - পিঠার তৈরির কার্যপ্রনালীঃ
- চালের গুড়ো আর ময়দা একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে ।
- একটা পাত্রে পানি দিয়ে চুলায় বসাতে হবে ।
- এরপর পানিতে রসুন বাটা , আদা বাটা , হলুদের গুড়ো ও লবন দিয়ে পানি ফুটাতে হবে।
- পানি ফুটে উঠলে পাত্রে চালের গুড়ো ও ময়দা ঢেলে দিতে হবে ।
- চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে খামির প্রস্তুত করতে হবে ।
- এবার বাটিতে সিদ্ধ খামির টা নিয়ে ভালো ভাবে মথে নিতে হবে ।
- মথা শেষ হলে খামির থেকে বড় করে গোলা নিয়ে বড় এবং মোটা রুটি তৈরি করতে হবে ।
- এখন এই বড় রুটি একটা ছোট গোলাকার কাটার বা স্টিলের গ্লাস ঢাকনা দিয়ে গোল শেপে কাটুন ।
- সবগুলো রুটি বেলা হয়ে গেলে গরম ডুবো তেল এ ভাজতে হবে ।
বাংলাদেশের এত পিঠার যে নাম বলে শেষ করা যাবে না৷ অঞ্চলভেদে বা গ্রামভেদে পিঠার ধরন, উপকরণ আলাদা হয়৷ চালের গুঁড়া ছাড়া পিঠায় মূল উপকরণে মিল পাওয়া কঠিন৷ এসব পিঠার মধ্যে পরিচিত পিঠাগুলো হচ্ছে সুন্দরী পাকন, ভাপা, চিতই, পোয়া, পাটিসাপটা, মুগ পাক্কন, মেরা পিঠা,মাল পোয়া ছাঁচ পিঠা, ছিটকা, আস্কে, চুটকি পিঠা, চাপড়ি, চাঁদ পাকন, ছিট, গোলাপ পাক্কন, লবঙ্গ লতিকা, সরভাজা, পুলি, আন্দশা, কুলশি, খেজুর কাটা নকশি, কলা/পানা পিঠা, খেজুর ঝুরি, ক্ষীর কুলি, গোকুল, রসফুল, ঝিনুক, দুধরাজ৷